অরুণ দাস
১.
চূর্নী, ইতিহাস তার গর্ভগৃহ খুলে দিল অনায়াসে ৷ দূর আস্তানায় আমাদের বিবর্ন দিনলিপি ৷ তোর চোখ ধাঁধানো বুকের ভূগোল ৷ স্তনের টুকরো দিয়ে সাজানো কবেকার একগুচ্ছ ছবি ৷ উপচে পড়া দুপুর৷ টলোমলো সবুজ জল ৷ তোর ফেলে আসা পায়ের ছাপ ৷
সন্দর্পনে
মন উড়ে যায় অতীত স্বপ্নের
কোনে৷
২.
আজ অনায়াসে ভাঙি
নিজেকে
নীল হয়ে যাওয়া স্বপ্নগুলো
খরস্রোতা রূপোলী স্রোতে
উধাও আর্তনাদ
…..তারপর স্মৃতির দৃষ্টি ভেঙে
নিশ্চিতে হারিয়ে যাই
পরিযায়ী পাখিদের ঠিকানায়৷
তেত্রিশ .
সোহাগ মাখা হৃদয় চঞ্চল
জীবন যেন শেখানো পাখির
ছল ৷
……………………..
১.
তোর সূর্য হলুদ স্রোতে ছুঁয়ে ফেলি আদিম স্পর্শ ৷মূক সন্ধ্যে খুলে নেয় শীতের
পোশাক ৷
জীবন যেন পাথুরে পথ
বরফের চাদর থেকে ঠিকরে পড়া আলো৷এ আগুন জ্বেলে দিই শীত সোহাগে ৷ ঠান্ডা হাওয়ায় ছুঁয়ে ফেলি মৃত্যু মরুভূমি ৷ সোহাগ ঋতুদের হাতছানি ভুলে নিশ্চিন্তে ঘুরে আসি দিব্যপথ৷
২.
চূর্ণী, জীবন যেন অনাসক্ত
অপূর্ব চাঁদ
হতাশ হৃদয় খুলে
লিখে রাখি
স্বপ্নের রাত ৷
চৌত্রিশ .
স্বপ্নকে ছুঁয়ে মিথ্যেই বলি
স্বপ্নহীন হবো না আর
কৃষ্ণকলি ৷
১.
তোর মূর্ছনায় জেগে উঠি ৷
ঘুমহীন শরীরে ছোট্ট অবসর ৷
উর্বর ভোর জাগে
নাম না জানা পাখির ডাকে
রূপকথা রাত খুলে,
ইচ্ছে স্বপ্ন
লিখে রাখি
রোজ
লিখে রাখি
মৌনমুখর
নিস্তব্ধ দিন ৷
জলছবি ছুঁয়ে থাকা পাহাড়
মূর্ত মূর্তহীন নদী
প্রজাপতি ছুঁয়ে যায় যে
আগুন
কুয়াশা মেঘ ছুঁয়ে থাকি
অনামি শরীর জুড়ে
সবুজ গালিচায় ভরে নিই
মৃত নদী
একফালি সোহাগে
একফালি স্বপ্নহীন সোহাগে ৷
২.
চূর্ণী, নীল পাহাড়ের
ক্যানভাসে আজ লিখে রাখি …সে সব সবুজ দিন ৷ অন্ধকার শিখে যাওয়া জোনাকী বর্ণ ৷
মৃত শামুক লিখে রাখে
শেষ বিদায়ের পথ
স্বপ্নহীন স্বপ্নের পথ ৷
পঁয়ত্রিশ .
এক জীবনে কত মৃত্যু জমা হলে
তিন সত্যি চেনা যায় নিজেকে?
১.
স্নিগ্ধ কাশের মেঘ মেখে থাকি,
বর্ষাভীরু চোখে ৷
আধো ঘুম অন্ধকারে,
ছুঁয়ে থাকা ইশারায় ৷
তোর শরীরের সবুজ ভাঁজ
খরস্রোতা শীতল হ্রদ
পর্দাভেজা চমক
আহ্লাদ আকাশ যেন
খসে পড়ে অনায়াসে
পাহাড়ী গন্ধ বুঁদ
তোর ত্রিশূল বুক
চুলচেরা চুম্বনে
ঝরে পড়া রাত ৷
২.
তোর লাজুক ঠোঁটের আলতো
বাতাসে, লিখে রাখি ফেরারী রোদের গন্ধ ৷
ঝুলন্ত চাঁদে পাতা ঝরার ছন্দ
দুরন্ত প্রাণ
ক্লান্ত জ্যোৎস্নায় গভীর
গোপন স্নান ৷
………
বল চূর্ণী ,
এক জীবনে
কত শত মৃত্যু জমলে
সত্যি সত্যি চেনা যায়
নিজেকে?