Z generation and Supreme Consciousness
এক.
জেড প্রজন্ম!! পরমচেতনা!!
…………………………………
ইতিমধ্যে Z-প্রজন্ম নিয়ে হৈচৈ শুরু হয়েছে । স্বাভাবিক । কিংবা অস্বাভাবিক । X,Y,Z আমার আবিষ্কার নয়। Z-প্রজন্মও আমার আবিষ্কৃত সময়সীমা নয়।
আমেরিকার বিজ্ঞানী নীল হোভ এবং উইলিয়ান স্ট্রস 1911 সালে দ্য জেনারেশন থিওরিটি তৈরি করেছিলেন । প্রজন্মের X,Yএবং Z-এর তত্ত্ব তাঁদের নামাঙ্কিত থিওরি।
তাঁদের মতে, এই প্রজন্মে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির দৃষ্টান্তমূলক উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে মানুষের চিন্তাশীলতা ও বুদ্ধিবৃত্তির চুড়ান্ত উন্নতি ঘটবে। মানুষ হবে সর্বাধিক সক্রিয়, জ্ঞানসম্পন্ন ও উদ্যোগী।
Z-প্রজন্ম এমন একটা সময় যখন মনুষ্য জীবনের অবস্থান, ভিত্তি, মূল্যবোধ এক চরমস্তরে পৌঁছায়। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির চরম উন্নতিতে বিশ্ব অনায়াসে চলে আসে মানুষের হাতের মুঠোয়। মানুষ হয় স্বাধীনচেতা, সামাজিক শৃঙ্খলার উর্দ্ধে।
এটি কি ‘চুড়ান্ত উন্নতি’ নাকি ‘চুড়ান্ত অবনমন’? চরম বৈপরীত্যের দ্বন্দ্বের মধ্যেই লুকিয়ে আছে Z-প্রজন্মের সত্য।
এতে এক শ্রেণীর মানুষ যন্ত্রনির্ভর, যান্ত্রিক হয়ে উঠবে। তেমনি কিছু মানুষ চাইবে আত্মজ্ঞানী হতে। খুঁজে পেতে চাইবে চেতনার উচ্চতম স্তরকে। নতুনত্বের অন্বেষক সৃষ্টিশীল মানুষের এই উচ্চতম চেতনাকে ছুঁতে চাওয়ার ইচ্ছা ও আকুতিই যেন পরমচেতনার পরম পথের প্রবেশদ্বার।
সাহিত্য-শিল্পে মানব মননের এই সর্বোচ্চ পথের সন্ধানই আমার একমাত্র উদ্দেশ্য।
আমার বিনীত স্বীকারোক্তি- আমি পরমচেতনার স্রষ্টা নই।সাহিত্য-শিল্পে একে উপলব্ধি ও প্রয়োগ পদ্ধতির একজন অতি সাধারণ পথপ্রদর্শক মাত্র। এটা স্পষ্ট ও অবধারিত যে, ‘পরম চেতনা’র পথই Z-প্রজন্মের শিল্পসৃষ্টির সূচক, নিয়তি ও পরিণাম। তেমনি এটাও সত্য ও নিশ্চিত যে, বহু হৃদয় তরুণ সৃষ্টিশীল মানুষের হাত ধরে আবিষ্কার হবে পরম চেতনার নতুন নতুন বৈশিষ্ট্য, লক্ষণ, ভাব, তথ্য ও তত্ত্ব। পরমচেতনাকে ছুঁয়ে ফেলার নতুন নতুন পথ। পথেরও পথ।
দুই.
জেড প্রজন্মের পথ, পরমচেতনার পথ
………………………………….
জেড প্রজন্মের কবিতা মানব মননের উচ্চতম চেতনা পরম চেতনার কবিতা। পরমচেতনার খোঁজ আসলে প্রকৃত সত্যের খোঁজ। বস্তু বিশ্বের মূলে থাকে এক সৌন্দর্যময় স্পন্দন । এই স্পন্দনের সঙ্গে নিজের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাকে মিলাতে পারলে সীমার মধ্যে অসীমতাকে ছুঁয়ে ফেলা সম্ভব হয়। এটি কবি জীবনের চরম ও পরম লক্ষ্য।
দৈহিক স্থূল আবেগকে সুনিয়ন্ত্রিত করতে পারলে বস্তু বিষয়ের বাহ্যিক রূপের বাইরে এক অনন্ত রূপের সন্ধান পান কবি। মনের উচ্চভূমিতে তিনি এক অবর্ণনীয়, আশ্চর্যময় পথের খোঁজ পান। বস্তু-বিষয়ের মধ্যেকার এক স্নিগ্ধময় আনন্দ ও অতীন্দ্রিয় রূপ ধরা দেয় তাঁর চোখে।
দৃষ্টির এই উচ্চতম অবস্থান কবির ভাষা ও অনুভবকে গভীরতম করে। কবির সামনে খুলে যায় প্রকৃত সত্যের দরজা।
আমাদের এই বাহ্যজগতের এই দ্বন্দ্বময় রূপকে অতিক্রম করতে পারলে কবি পৌঁছে যান এই সত্য স্বরূপে । যা তাঁকে পৃথিবী, জল, অগ্নি, বায়ু ও আকাশ থেকে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র ও অতিসূক্ষ্ম অনুভবের পথে নিয়ে যাবে। প্রতিটি বস্তু ও প্রানীর মধ্যেকার দর্শনকে অতি সহজে তিনি উপলব্ধি অনুভব করতে পারবেন। কবি অনুভব করবেন বস্ত-প্রাণী-বিষয়ের অন্তর্নিহিত ত্রিমূর্তি, ত্রিকালদর্শী পরম চেতনার সূক্ষ্ম ধ্বনিকে।
– অরুণ দাস